কখনো কখনো পুরনো কোন কথা, স্মৃতি অথবা ঘটনা আমাদের মানসিক যন্ত্রনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সেই ঘটনা বা কথা অথবা স্মৃতি অনবরত আমাদের মস্তিষ্কে ঘুরতে থাকে। নিজেদের খুব অসহায় বলে মনে হয়। কাউকে খুঁজে বোঝানোও যায় না আবার যে মানুষটি এই ঘটনা বা কথা অথবা স্মৃতির জন্যে দায়ী, তাকেও কিছু বলা যায় না। চারপাশের সবকিছু বিরক্তিকর বলে মনে হতে থাকে। কখনো কখনো তো আমরা এই বিরক্তি কিংবা মন খারাপের কারণও বুঝতে পারি না। এই সমস্যাটিকে বলা হয় PTSD (Post Traumatic Stress Disorder)। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের এমন এক অবস্থা যা ভীতিজনক ঘটনা দ্বারা উদ্দীপ্ত হয়।
উপর্যুক্ত লক্ষণগুলো থাকলেই PTSD আছে বলে ধরে নেয়া যাবে না। যদি লক্ষণগুলো আরও খারাপ হয়, মাস বা এমনকি কয়েক বছর ধরে স্থায়ী হয় এবং প্রতিদিনের কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করে তবে তাকে বলা PTSD যেতে পারে।
PTSD লক্ষণগুলো সাধারণত চার ধরনের হয় ঃ
১।অনুপ্রবেশ মূলক স্মৃতি
মারাত্মক মানসিক সংকট বা এমন কিছুতে শারীরিক প্রতিক্রিয়া যা আঘাতমূলক ঘটনার স্মরণ করিয়ে দেয়।
২। এড়ানো, চিন্তাভাবনা
এমন জায়গা, ক্রিয়াকলাপ বা এমন লোকজন এড়ানো যা আঘাতমূলক ঘটনার স্মরণ করিয়ে দেয়।
৩। মেজাজে নেতিবাচক পরিবর্তন
নিজেকে নিয়ে, অন্য ব্যক্তি বা বিশ্ব সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা।
৪। শারীরিক এবং মানসিক প্রতিক্রিয়া পরিবর্তন।
বিরক্তি ভাব , রাগান্বিত আক্রমন বা আক্রমণাত্মক আচরণ, অপ্রতিরোধ্য অপরাধবোধ বা লজ্জাবোধ।
সময়ের সাথে লক্ষণগুলি পরিবর্তিত হতে পারে বা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি পৃথক হতে পারে।
আমরা এ রোগের ভুক্তভোগী হয়েও এ রোগ সম্পর্কে অবহিত নই। মাস কিংবা বছর ধরে পুরনো স্মৃতি আমাদের তাড়িত করতে থাকলেও, মন খারাপের কারণ না বুঝতে পেরেই ডিপ্রেশন নামকরণ করে ফেলি। ফলে যথার্থ চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব হয় না এবং আমরা আরও বেশি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি।
যদি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আপনার কোন ট্রমাজনিত ঘটনা সম্পর্কে বিরক্তিকর চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি থাকে, যদি সেগুলো গুরুতর হয়, বা আপনি যদি মনে করেন যে আপনার জীবন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনার সমস্যা হচ্ছে তবে আপনার ডাক্তার বা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সাথে কথা বলুন। যথাসময়ে চিকিৎসা PTSD লক্ষণগুলো আরও খারাপ হওয়া থেকে রোধ করতে সহায়তা করে।
Source : https://www.mayoclinic.org/.../symptoms-causes/syc-20355967
Comments